স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা:
নারী দিবস তাঁর কাছে দুঃখের৷ এই দিবস তাঁকে কখনও আনন্দ দেয় না৷ কারণ,
তিনি মনে করেন, প্রাপ্য অধিকারের জন্য নারীদের এখনও চিৎকার করতে হচ্ছে৷ আর,
তাই, তিনি মনেপ্রাণে নারী দিবসের বিলুপ্তি চাইছেন৷
তিনি, ‘লজ্জা-র শিল্পী’৷ কোনও কোনও মহলের
কাছে তিনি ‘বিতর্কিত লেখিকা’ হিসেবেও পরিচিত৷ তিনি, তসলিমা নাসরিন৷ এবং, আট
মার্চ যে সময়ে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন অংশের নারীরা
বিভিন্ন উপায়ে উদযাপনে মেতে উঠেছেন, তেমন সময়ে, কার্যত আন্তর্জাতিক নারী
দিবস পালনের বিরোধিতাও করলেন তিনি আপন ঢঙে৷
মঙ্গলবার, আট মার্চ তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে
তসলিমা নাসরিন এমনই মন্তব্য পেশ করেছেন, নারী দিবস তাঁকে কখনও আনন্দ দেয়
না৷ কারণ, এই দিনটি তাঁর কাছে অত্যন্ত দুঃখের৷ আর, তার কারণ হিসেবে লেখিকার
যুক্তি, প্রাপ্য অধিকারের জন্য নারীদের এখনও চিৎকার করতে হচ্ছে৷ এ দিন
ফেসবুকে ‘লজ্জা-র শিল্পী’র এমন মন্তব্য প্রকাশ পেয়েছে, সেই কতকাল আগে,
সম্ভবত ১০৫ বছর আগে নির্যাতিত, নিপীড়িত, অত্যাচারিত ও অসম্মানিত না হওয়ার
অধিকার চেয়েছিলেন নারীরা৷ সেই থেকে এখনও প্রতি বছর এই দিনে একই অধিকার
চাওয়া হয়৷ কারণ হিসেবে ফেসবুকের ওই মন্তব্যে তাঁর এমনই ব্যাখ্যা, নারী
হয়ে জন্ম নেওয়ার অপরাধে, নারীরা এখনও নির্যাতিত, নিপীড়িত, অত্যাচারিত
এবং অসম্মানিত হয়ে চলেছেন৷
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনায় অধিকার,
গণতন্ত্রের পক্ষে জোরদার সওয়াল করে চলেছেন তসলিমা নাসরিন৷ বিভিন্ন সময়
বিভিন্ন ঘটনায় প্রকাশ পেয়ে চলেছে কলকাতায় তাঁর আর ফিরতে না পারার
যন্ত্রণা-ও৷ এ দিন ফেসবুকে তসলিমা নাসরিন এমনও বলেছেন, ‘আমরা নারী দিবস
পালন করছি, এর অর্থ আমরা নারীরা আজও বঞ্চিত, লাঞ্ছিত৷ যেদিন সমানাধিকার
পেয়ে যাব, সেদিন থেকে এই দিবসটির আর প্রয়োজন পড়বে না৷ সর্বান্তকরণে
দিবসটির বিলুপ্তি চাই আমি৷’ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে যেভাবে এই দিনটির
বিলুপ্তি চেয়েছেন তসলিমা নাসরিন, সেই বিষয়েও বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন ধরনের
মতামত প্রকাশ পাচ্ছে৷ তবে, ফেসবুকেই আবার লেখিকার মন্তব্যের পক্ষে জোরদার
সাড়াও মিলছে তাঁর-ই অনুরাগীদের তরফে৷ তেমনই, কোনও কোনও মহল থেকে এমনও বলা
হচ্ছে, নারী এবং পুরুষকে পৃথক পরিচয়ে আবদ্ধ না রেখে যখন উভয় তরফ-ই মানুষ
হিসেবে পরিচিতি পাবে, তখন আর হয়তো এমন দিবস উদযাপনের প্রয়োজনও দেখা দেবে
না৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন