বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৬

দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে ফের রক্তাক্ত রাজ্য




কলকাতা: দ্বিতীয় দফার ভোটের মুখে ফের রাজ্য জুড়ে হিংসা৷ রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম বেশ কয়েক জন৷ বাড়ি ভাঙচুর, বোমা, গুলি অব্যাহত উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের জেলায়৷ 

বুধবার সকালে তৃণমূলের মিছিলে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠে৷ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সত্যেন রায়ের মিছিলে হামলার অভিযোগ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা৷ মিছিল লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোঁড়া হয় বলেও অভিযো৷ ভাঙচুর চালানো হয় দুটি গাড়িতে৷ এই ঘটনায় জখম হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন তৃণমূল কর্মী৷ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বীরেন হালদার নামে এক তৃণমূল সমর্থক৷ আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে৷ এদিন গঙ্গারামপুরের নন্দনপুর এলাকায় সত্যেনবাবু মিছিল করার সময় তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়৷ একটি বৈদ্যুতিক মাধ্যমের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলার সময় সত্যেনবাবু বলেন, ‘‘সিপিএমের দুষ্কৃতীরাই এই হামলা চালিয়েছে৷’’ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷  যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম৷ দক্ষিণ দিনাজপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নরেণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এটা তৃণমূলের দলীয় কোন্দল৷ ঘরের সমস্যা লুকাতে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে ওরা৷’’ অন্যদিকে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে  সন্ত্রাসের নালিশ জানিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেওয়া দিচ্ছে তৃণমূল৷ 

মালদহের কালিয়াচকের বাখরপুরে তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল দুষ্কৃতীরা৷ দুলালকা কাজি নামের ওই তৃণমূল কর্মীকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে৷ ঘটনার জেরে কালিয়াচকের বাখরপুর এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়৷ এদিন এই ঘটনার পেছনে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা যুক্ত থাকতে পারে অভিযোগ করেছে করেছে তৃণমূল৷ এর পাশাপাশি, মালদহের বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার বেদরাবাদ গ্রামে পারেক মণ্ডল নামে এক আম ব্যবসায়ীর বাড়িতে কয়েক জন আগ্নেয়াস্ত্র  ও বোমা নিয়ে চরাও হয় বলে অভিযোগ৷ পারেক মণ্ডল ও তার স্ত্রীর সঙ্গে একজন দুষ্কৃতী দলের প্রবল ধস্তাধস্তি হয়৷  ওয়েদুল রহমান নামের এক দুষ্কৃতী পারেক ও তার স্ত্রী সুমিতাকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ৷ মারধরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বাসিন্দারা৷  গ্রামবাসীদের আসতে দেখে দুষ্কৃতী দলটি পালিয়ে যায়৷ ধরা পড়ে যায় ওয়েদুল রহমান৷ স্থানীয় তাকে ধরে বেধড়ক মারধর করে৷ পুলিশ এসে ওয়েদুল,পারেক ও সুমিতাকে  গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি করে৷ পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওয়েদুল রহমানের৷ স্বামী-স্ত্রী এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে৷ বাকিদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে৷ এই ঘটনার পরই আরও একটি মারধরে খবর পাওয়া যায়৷  মালদহে তৃণমূলের বৈঠকে যাওয়ায় এক ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হবিবপুরের বামনগোলা থানার মদনাবতী গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে,  নিগৃহীতর নাম কোকিল মালপাহাড়ি। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি বামনগোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ তৃণমূলের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করছে সিপিএম৷ 

অন্যদিকে,  মিছিলে যাওয়ার অপরাধে সিপিএম কর্মীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আজ, বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় কাশীপুর বাজারে। এই ঘটনায় তিন জন সিপিএম কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷  

মঙ্গলবার, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের জেলায় দফায় দফায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের খবর প্রকাশ্যে আসে৷ বুধবারও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে এল, একাধিক রাজনৈতিক হিংসার ছবি৷ রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটের তিন দিন আগেই রক্তাক্ত রাজনীতির ময়দান৷  

কোন মন্তব্য নেই: